বাস্তব পরিস্থিতি মানুষকে বদলায়:
কিছু ছেলে মেয়েরা স্বভানতই কিছুটা ছন্নছাড়া হয়,একটু বাউন্ডুলে টাইপ,একটু অগোছালো হয়।জীবনের একটা সময় পর্যন্ত "কেয়ারলেস" এটিটিউড নিয়ে তারা ঘুরে বেড়ায়।
কিন্তু কিভাবে এই ছেলে মেয়েরাই জীবনের একটা সময়ের পর কি ভীষণ দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে;হয়ে ওঠে একজন আদর্শ নারী বা পুরুষ।
হয়তো তারা নিজেরাও অবাক হয়ে যায় তাদের নিজেদের পরিবর্তন দেখে;আয়নায়র সামনে দাঁড়য়ি নিজেদেরকেই চিনতে ইতস্তত বোধ করে।
★এক গ্লাস পানি ঢেলে না খাওয়া ছেলেটা অন্য শহরে পড়াশুনো করতে গিয়ে দিনের পর দিন মেসে হাত পুড়িয়ে রান্না করে খায়।খিদের পেটে কখনো অর্ধসিদ্ধ ভাত,কখনো পুড়ে যাওয়া রুটি তৃপ্তি করে খায়।
★ছাদ থেকে তুলে আনা জামাকাপড় নিজের বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে রাখা মেয়েটাও কি ভয়ঙ্কর ভাবে আলমারির প্রতিটা তাক গুছিয়ে রাখতে শিখে যায়।জুতোর র্যাকে জুতো গুছিয়ে রাখে, ফুলদানিতে ফুল গুছিয়ে রাখে,পড়ার টেবিলে বই গুছিয়ে রাখে।
★কথায় কথায় রেগে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া ছেলেটা টানা দশটা বছর ধরে একটা সম্পর্ককে আগলে রাখতে শিখে যায়।হাজারটা অপমান, অবহেলা সহ্য করে পড়ে থাকতে শিখে যায়।
★জন্মদিনে নিজের পছন্দের উপহার না পাওয়ার অভিমানে মুখ ফুলিয়ে সারাদিন বসে থাকা মেয়েটাও সত্যি একটা সময়ের পর নিজের জন্মদিনটাই ভুলে যায়।সংসার ও অফিসের দায়িত্ব সামলাতে সামলাতে মেয়েটা নিজের জন্মদিনের তারিখটা আর মনে রাখে না।
★গিটার হাতে পাহাড়ে জঙ্গলে ছুটে বেড়ানো ছেলেটা বছরের পর বছর আর ঘুরতে যায় না। শুধু বাড়ি থেকে অফিস যায়,আর অফিস থেকে বাড়ি ফেরে,নিজের শখ,ইচ্ছেগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজের পরিবারের সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়।
★ভীষণ চঞ্চল,সারাক্ষণ সুন্দর করে সেজেগুজে ফড়িংয়ের মতো লাফিয়ে বেড়ানো মেয়েটা একটা সময়ের পর শান্ত,স্নিগ্ধ হয়ে যায়। চোখে কাজল লাগাতে ভুলে যায়,চুলে খোঁপা করতে ভুলে যায়,নামিদামী ব্র্যান্ডের পোশাক পরতে ভুলে যায়।আর কোনো কিছু পাওয়ার জন্য বায়না করে না।সবকিছুর সাথে মানিয়ে নিতে শিখে যায়।
★বন্ধুদের পেছনে টাকা খরচ করা ছেলেটা সংসার স্বচ্ছল রাখার জন্য ওভারটাইম করে।
★নিজের শরীর খারাপের ওষুধ খেতে ভুলে যাওয়া মেয়েটা প্রিয়জনের জ্বর হলে সারারাত জেগে থাকতে শিখে যায়।
পরিস্থিতি মানুষকে বদলে দেয়।আর তারপর মানুষ নিজের পরিস্থিতিগুলোকে পাল্টাতে শুরু করে।কী নিদারুণ বাস্তবতা!
