ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার:
কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।যদি স্বাস্থ্যই ঠিক না থাকে তবে কোনো কিছুই আরামদায়ক মনে হয় না।যতোই ভালো খাবার দাবার হোক না কেনো যদি সঠিক মতো ঘুম না হয় তবে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাটা বেশ কষ্টসাধ্য।
নিয়মিত ঘুম না হলে শরীরে ক্লান্তি চলে আসে।কোনো কাজে মন বসে না।একধরনের অবসাদ কাজ করে দেহ ও মনে।অনেকেই একটানা ঘুমানোর জন্য ঘুমের ঔষুধ খেয়ে থাকেন।অথচ তারা জানেনই না যে এই ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ঘুমানোটা কতো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে শরীর ও মস্তিষ্কে।বিশেষজ্ঞদের মতে অতিরিক্ত ঘুমের ঔষুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।তাহলে জেনে নিন কিভাবে ওষুধ ছাড়াই একটানা ঘুমাবেন তার কৌশল।
ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকারঃ
গবেষকদের মতে ঘুম না হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
দুশ্চিন্তাঃ
ঘুম না হওয়ার অন্যতম কারণ বহুবিধ বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকা।যার ফলে ব্রেইন সবসময় অস্থির থাকে ঠিক মতো নিউরন সঞ্চার হতে বিঘ্ন ঘটে।তাই অযথা চিন্তা বাদ দিন।
ঘুম না আসা সত্ত্বেও বিছানায় শুয়ে গড়াগড়ি করাঃ
অনেক সময় আমরা যা করি তাহলো ঘুমানোর জন্য শুয়ে পড়লে ঘুম না আসলেও বিছানায় শুয়ে থেকে এপাশ ওপাশ গড়াগড়ি করি যাতে ঘুম আসে।কিন্তু এই পদ্ধতি কখনো ঘুম আসার জন্য উপযুক্ত নয়।কাজেই ঘুম না আসলে তাত্ক্ষণিক বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ুন।উঠে হাটাহাটি শুরু করুন।যতক্ষণ না ঘুম আসে।অথবা এমব কিছু করুন যা আপনাকে ক্লান্ত করে তুলবে।অবশ্য অন্ধকারে হাটবেন আলোর মধ্যে হাঁটতে গেলে উল্টো ঘুম পালিয়ে যাবে।
চা-কফি এড়িয়ে যানঃ
এ জাতীয় খাবার ঘুম তাড়িয়ে দেয়।তাই ঘুমানোর অনন্ত চার বা পাঁচ ঘন্টা আগে চা কফি পান করতে হলে করে নিন।এরপর আর করবেন না।অন্যদিকে যাদের ঘুম রাতে একেবারেই হয় না তারা দিনের বেলাও চা কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন।গবেষকদের মতে দুপুর বেলা চা কফি পান করলে অনেকের রাতে ঘুম আসে না।
গরম পানিতে গোসল করুনঃ
গরম পানিতে গোসল করে ঘুম আনার পদ্ধতিটা বেশ কার্যকরি।যদি ঘুম না আসে তবে হালকা উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করে নিন।এই পদ্ধতি শরীরকে শীতল করে ঘুম আসতে সাহায্য করবে।
মেডিটেশন বা ধ্যানঃ
মেডিটেশন পদ্ধতি বেশিরভাগ লোকই চেষ্টা করে ঘুমানোর জন্য।এই পদ্ধতি মন ও দেহকে শীতল করে ঘুম ধরাতে যথেষ্ট কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।ধ্যান শরীরেকে স্তব্ধ করে।তাছাড়া ধ্যানের মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস গভীর হয়ে নিবিড় ঘুম আসতে সাহায্য করে।
শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যয়ামঃ
ঘুম আসতে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে এটা।বিশেষজ্ঞদের মতে,যারা নিয়মিত পরিশ্রম করেন এবং ব্যয়াম করে থাকেন তারা রাতে ভালো ঘুম ঘুমাতে পারেন।সুতরাং নিয়মিত ভালো ঘুম হতে হলে শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যয়ামের বিকল্প নেই।
যোগ ব্যয়ামঃ
এটি অন্যতম প্রাচীন একটি পদ্ধতি।এই পদ্ধতির সাহায্যে গভীর ঘুম আনা সম্ভব হয়।এই ব্যয়াম শরীরকে শীতল করে।
অ্যারোমা থেরাপিঃ
অ্যারোমা থেরাপিতে এর মধ্যে যেসকল প্রয়োজনীয় ভেষজ তেল, বা গ্রাফ চোখে মুখে ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় যা ঘুম আসতে সাহায্য করে।বিজ্ঞানীদের মতে ভেষজ তেলের ঘ্রাণ ঘুম হওয়ার জন্য বেশ কার্যকরি।তাই চাইলে এই ভেষজ তেলের বা অ্যারোমা থেরাপির ট্রিটম্যান্টটা যেকোনো পার্লারে গিয়ে প্রয়োগ করে দেখতে পারেন।
শুইবার ঘরঃ
ভালো ঘুমের জন্য শুইবার ঘুর বেশ প্রভাব ফেলে।তাই ঘর উপযুক্ত হওয়া চাই।এমন ঘরে যদি ঘুমান যার আশেপাশে প্রচুর শব্দ হয় বা আলো আসে ঘরের মধ্যে তবে ভালো ঘুম কখনো হবে না।শুইবার ঘরে যদি টিভি কম্পিউটার থেকে থাকে তাহলে এগুলো সরিয়ে ফেলুন।এগুলো ঠিক মতো ঘুমাতে বাধার সৃষ্টি করে।
প্রগ্রেসিভ মাসেল রিলাজিনঃ
এই ব্যায়ামটি ১৯১৫ সালে আবিষ্কৃত হয়।এই পদ্ধতির মাধ্যমে টানা ঘুমানো সম্ভব হবে।অনেক আগে এই পদ্ধতির আবিষ্কার হলেও এর কার্যকরিতা এখনও বেশ উপকারী।এই ব্যায়াম পেশিকে শীতল করে তুলে।তাছাড়া এই ব্যায়াম অবশূন্যতা দূর করে ঘুমের পরিমাণ বাড়ায়।
উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো মেনে চললে বা প্রয়োগ করলে কোনোরূপ ঔষুধ সেবন ছাড়াই একটানা গভীর ঘুম ঘুমাতে পারবেন।
